বিশেষ প্রতিনিধি, দ্য ইনভেস্টিগেশন নিউজ: নরসিংদীর পলাশে নিখোঁজের চারদিন পর মাইশা আক্তার নামে সাড়ে ৩ বছরের এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
মাইশা আক্তার জয়নগর গ্রামের মেহেদী হাসানের মেয়ে। সে শুক্রবার (২১ জুন) থেকে নিখোঁজ হয়। তাকে কোথাও খুঁজে না পেয়ে নিখোঁজের দিন রাতেই পলাশ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন মাইশার বাবা মেহেদী হাসান।
এ ডায়েরীর পরিপ্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার (২৫ জুন) সকালে র্যাব সদস্যরা অনুসন্ধান চালিয়ে পলাশ উপজেলার ডাংগা ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামের মেহেদী হাসানের নিজ বাড়ির শৌচাগারের সেফটি ট্যাংক থেকে শিশু মাইশার মরদেহ উদ্ধার করে র্যাব-১১।
শিশু মাইশা হত্যার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে আটক করেছে র্যাব-১১, সিপিএসসি, নরসিংদী।
আটককৃতরা হলো- কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী এলাকার জালাল শেখ (৪৮), তার স্ত্রী মাহফুজা শেখ (৩৯) ও ছেলে বিল্লাল শেখ (২০)।
এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে পলাশ থানার ওসি তদন্ত মো. জসিম দ্য ইনভেস্টিগেশন নিউজকে বলেন, শিশু মাইশা নিখোঁজের ঘটনায় ডাংগা থেকে বিল্লাল শেখ নামে বাড়ির ভাড়াটিয়াকে আটক করে র্যাব। পরে তার দেওয়া তথ্যমতে শৌচাগারের সেপটিক ট্যাংক থেকে মাইশার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
আজ মঙ্গলবার (২৫ জুন) নরসিংদী র্যাব- ১১ সিপিএসসি, সিনিয়র সহকারী পরিচালক ও নরসিংদী ক্যাম্প কমান্ডার নিশাত তাবাসসুম সংবাদ সম্মেলনে জানান, শিশুটি নিখোঁজের পর থেকে তদন্তে নামে র্যাব- ১১র নরসিংদী ক্যাম্পের একটি টিম।
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, স্থানীয় লোকজন এবং নিহত মাইশার পরিবারের দেওয়া তথ্য ও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে প্রথমে সন্দেহভাজন বিল্লাল শেখ (২০) কে আটক করে র্যাব- ১১।
র্যাবের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃত বিল্লাল স্বীকার করে শিশু মাইশাকে হত্যার পর শৌচাগারের সেফটিক ট্যাংকের ভেতর লুকিয়ে রেখেছে।
পরবর্তীতে র্যাব- ১১, সিপিএসসি, নরসিংদীর একটি আভিযানিক দল তার দেয়া তথ্য অনুসারে ঘটনাস্থলে পৌছে শৌচাগারের সেপটিক ট্যাংকের ভেতর থেকে শিশু মাইশার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
শিশুটির মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এ সময় শিশু মাইশা হত্যার ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে প্রধান আসামী কুষ্টিয়ার কুমারখালী এলাকার জালাল শেখ (৪৮) ও তার স্ত্রী মাহফুজা শেখ (৩৯) কে আটক করে র্যাপিড একশন ব্যাটালিয়ন র্যাব- ১১।
আটককৃত আসামিরা শিশুটির বাবা মেহেদী হাসানের বাড়ির ভাড়াটিয়া।
নরসিংদী র্যাব- ১১র ক্যাম্প কমান্ডার নিশাত তাবাসসুম দ্য ইনভেস্টিগেশন নিউজকে বলেন,শিশু মাইশা বাড়ির সামনে খেলাধূলার সময় জালাল মিয়াকে বালু নিক্ষেপ করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শিশুটিকে ধমক দিলে সে দৌড় দিয়ে মাটিতে পড়ে আঘাত প্রাপ্ত হয়। পরে শিশুটিকে বাড়িতে ধরে নিয়ে যায় জালাল। এরপর থেকে শিশুটিকে পাওয়া যাচ্ছিল না। শিশু মাইশাকে কি কারণে হত্যা ও লুকিয়ে রাখার ঘটনা ঘটানো হয়েছে তা আটকৃতদের আরও জিজ্ঞাসাবাদের পর বিস্তারিত জানা যাবে।
এ দিকে শিশু মাইশার মৃত্যুতে শোকে ভারী হয়ে উঠেছে পুরো গ্রাম। তুচ্ছ বিষয়ে এমন নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনা মানতে পারছেন না কেউ। হত্যার সঙ্গে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান এলাকাবাসী।
এ ব্যাপারে আটককৃত আসামিদের বিরুদ্ধে জেলার পলাশ থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান র্যাব।
দ্য ইনভেস্টিগেশন নিউজ
দৃষ্টান্ত মুলক শান্তির ব্যাবস্থা করা হোক।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।